সিজারের পর বেল্ট পরার নিয়ম - সিজারের পর খাবার তালিকা

গর্ভাবস্থায় কি কি খাওয়া যাবে নাপ্রিয় পাঠক, সিজারের পর বেল্ট পরার নিয়ম সম্পর্কে মেয়ারা অনেকেই তেমন একটা জানেন না। তেমনি আপনি ও যদি না জেনে থাকেন তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। কারণ আজকের এই সম্পূর্ণ আর্টিকেল জুড়ে সিজারের পর বেল্ট পরার নিয়ম, সিজারের পর খাবার তালিকা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।
সিজারের পর বেল্ট পরার নিয়ম
আপনারা যারা এ সম্পর্কে অবগত নন। বিস্তারিত জানতে চান তারা অবশ্যই পুরো পোস্টে মনোযোগ সহকারে পড়ুন। আশা করি এ পোস্টটি করলে আপনি সিজার পরবর্তী কালীন কিভাবে যত্ন নিবেন সেই সম্পর্কেও বিস্তারিত জানতে পারবেন।

ভূমিকা

সিজারের পরবর্তীকালীন সময়ে অনেক নিয়ম কানুন রয়েছে। যেই গুলো সম্পর্কে আমরা অনেকেই সঠিকভাবে জানি না। যার ফলে অনেকে অনেক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তাই আমাদের সকলকে এই বিষয়ে সম্পর্কে খুবই সচেতন হতে হবে। আর তা না হলে নবজাতকের সাথে সাথে বাচ্চার মায়েরও অনেক ক্ষতির সম্মুক্ষিন হতে পারে।

আপনি যদি আজকের এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকেন তাহলে আপনি সিজারের পর খাবার তালিকা, সিজারের পর শোয়ার নিয়ম, সিজারের পর কাটা স্থানের যত্ন, সিজারের পর ইনফেকশনের লক্ষণ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। তাহলে চলুন এখন বেশি দেরি না করে বিস্তারিত আলচনায় যাওয়া যাক।

সিজারের পর খাবার তালিকা

সিজার পরে সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো খাবার। পুষ্টিকর খাবার যত খাওয়ানো যাবে একজন সিজারকৃত মা তত দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবে। সিজারিং অপারেশন করার সময় অনেক ব্লাড চলে যায়। যার ফলে একজন মা শারীরিকভাবে অনেক দুর্বল হয়ে পড়ে। তাই যে সকল খাবারে ব্লাড হয়, সেই সকল খাবার বেশি পরিমাণে খাওয়াতে হবে।

যেমনঃ গরুর মাংস, কবুতর, ডুমুর, কাঁচা কলা, কালোজিরা, কচি মুরগির মাংস, বাদাম, ডাল, ডিম, দুধ এবং বিভিন্ন ক্যালরিযুক্ত খাবার। এসব খাবার রোগীকে বেশি পরিমাণে দিতে হবে সুস্থ হওয়ার জন্য পুষ্টিকর খাবার অত্যন্ত জরুরী। বাচ্চা ও মা সুস্থতার জন্য সঠিকভাবে খাবার দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। দ্রুত সুস্থ হওয়ার জন্য খাবারের কোন বিকল্প নেই।

তাই আমাদের উচিত একজন মা তার সিজার অর্থাৎ অপারেশান করার পরে উপরে উল্লিখিত সকল খাবার দিতে হবে। আর প্রতিদিন যেন ভালোভাবে খেতে পারে সেই দিকে ও লক্ষ্য রাখতে হবে। আর এর পাশাপাশি কিছু শারীরিক ব্যায়াম ও করানো যেতে পারে।

সিজারের পর শোয়ার নিয়ম

সিজার পর স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে অনেক সময় লাগে। এ সময় প্রচুর পরিমাণে ঘুমের প্রয়োজন হয়। সিজার এর পর অনেক মায়েরা সঠিকভাবে শোয়ার নিয়ম বুঝতে পারেন না। যার ফলে অনেকের অনেক কষ্ট হয়। সিজারের ফলে কাঁটা স্থানে প্রচন্ড পরিমাণে ব্যথা হয়। যার জন্য সিজারকৃত ব্যাক্তিকে খুব সাবধান ও সতর্কতার সাথে ওঠা বসা করতে হবে।

এই সময়ে ঘুমের যেহেতু প্রচুর পরিমাণে প্রয়োজন সে জন্য আমাদেরকে শোয়ার ব্যবস্থাটা সঠিকভাবে জানতে হবে। তাই আপনি যদি এই সম্পর্কে অবগত না হয়ে থাকেন তাহলে আপনি এখন এই আর্টিকেলটি সঠিকভাবে সম্পূর্ণরূপে পড়তে থাকুন। আশা করছি বিষয়টি সম্পর্কে বুঝতে পারবেন।

সিজারিং অবস্থায় আমাদেরকে চেষ্টা করতে হবে চিত হয়ে শোয়ার জন্য। কোনভাবে উপর হয়ে শোয়া যাবেনা। ডান বাম দিক হওয়ার সময় খুব ধীরে ধীরে ঘুরতে হবে। সাবধানতার সাথে চলাফেরা করলে খুব দ্রুত সুস্থতা অর্জন করা যাবে। সিজারের সময় ঠিক এভাবে সঠিক নিয়মে শুতে হবে। আর পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমাতে হবে।

সিজারের পর কাটা স্থানের যত্ন

সিজার অর্থাৎ অপারেশান করার পরে তার সঠিক জত্ন নিতে হয়। আর তা না হলে অনেক বিপদের সম্মুখিত হতে পারে। অনেকেই এই যত্ন সম্পর্কে তেমন একটা জানেন না। তাই আপনি ও যদি এই সম্পর্কে না জেনে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপয়ানার এখনি জেনে নেওয়া উচিত। তাহলে চলুন এখন সেই সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

সিজারের পর কাঁটা স্থানে যত্ন সবচেয়ে জরুরী। সিজার করা কাটা জায়গায় কোন প্রকার ইনফেকশন না হয় সে জন্য কাটা স্থানের যত্ন বেশি পরিমাণে নিতে হবে। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত ড্রেসিং করতে হবে। নিয়মিত এন্টি সেফটিক মলম ব্যাবহার করতে হবে। কাঁটা স্থানে কোন প্রকার পানি লাগানো যাবে না। সকল প্রকার নিয়ম নীতি মেনে চললে কাটা জায়গা খুব দ্রুতই শুকিয়ে যাবে।

সিজারের পর ব্যথা কতদিন থাকে

যারা প্রথম সিজার করে তারা অনেকে জানতে চেয়েছেন কতদিন পর্যন্ত কাটা জায়গায় ব্যথা করে। এখন আমরা আপনাদের সেই বিষয়ে জানার জন্য যহযোগিতা করবো। তবে সেটা জানার জন্য অবশ্যই আপনাকে মনোযোগ সহকারে আর্টিকেলটি পড়তে হবে। আর তা না হলে আপনি কিছুই বুঝবেন না।

সিজারের পর প্রথম ১৫ দিন খুব বেশি পরিমাণে ব্যথা করে। তারপরে আস্তে আস্তে ১৫ দিন হালকা ব্যথা করে। প্রথম ১৫ দিন আমাদের অনেক সাবধানে চলাফেরা করতে হবে। কোন প্রকার অসতর্কতা আপনার জন্য যেন কোন ক্ষতির কারণ না হয়ে যায় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

সিজারের পর বেল্ট পরার নিয়ম

সিজারের পর আমাদের কাঁটা স্থানে প্রচন্ড পরিমাণ ব্যথা হয়। যার ফলে আমাদের হাঁটাচলা করতে অনেক সমস্যা হয়। এ ব্যথা একটু কমানোর জন্য সিজার অবস্থায় বেল্ট ব্যবহার করতে হয়। বেল্ট ব্যবহার করার কিছু সঠিক নিয়ম কানুন রয়েছে। সেই বিষয়ের দিকে লক্ষ্য রেখেই বেল্ট ব্যাবহার করতে হবে। সেই সকল নিয়মগুলো নিম্নে বলা হলো।
  • আপনার পেটের সাইজ অনুসারে বেল্ট নিতে হবে।
  • বেল্টের বাম সাইড হতে ডান সাইড পর্যন্ত লাগাতে হবে। শুয়ে থাকা অবস্থায় বেল্ট ব্যবহার করার প্রয়োজন নাই ।
  • শোয়া থেকে উঠার সময় খুব ধীরে বেল্ট টাইট করে লাগিয়ে বিছানা থেকে উঠতে হবে।
  • হাটাহাটি করার সময় বেল্ট ব্যবহার করতে হবে।
  • কোন ভারী জিনিস তোলার জন্য বেল্ট ব্যবহার করতে হবে।
  • গাড়িতে চলাচলের সময় কোথায় জার্নি করলে অবশ্যই বেল্ট ব্যবহার করতে হবে।
এইরকম উপায়ে এক বছর পর্যন্ত এভাবে নিয়মিত বেল্ট ব্যবহার করে কাজ করতে হবে। তবে আপনি খুব তারাতারি সুস্থ হয়ে যাবেন। আর আপনি সুস্থ ও থাকতে পারবেন। অন্যথায় অবশ্যই আপনাকে ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।

সিজারের কতদিন পর সেলাই শুকায়

সিজারের কতদিন পর সেলাই শুকিয়ে যায় অনেকেই এই সম্পর্কে জানতে চাই। তেমনি আপনি ও এই সকল ব্যাক্তির মধ্যেই একজন। তাই আপনি ও যদি না জেনে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনাকে মনোযগ সহকারে পড়তে হবে। তাহলেই আপনি সঠিকভাবে জানতে পারবেন।

এক এক জন ব্যাক্তির একেক সময় লাগে সিজারের পর কাটা স্থানে সেলাই শুকাতে। যাদের পেটে চর্বির পরিমাণ বেশি তাদের একটু বেশি সময় লাগে। আর যারা স্লিম তাদের একটু কম সময় লাগে। তবে সাধারণত সকল ব্যাক্তিরই ৭ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে কাঁটা স্থানের সেলাই শুকিয়ে যায়।

সিজারের পর ইনফেকশনের লক্ষণ

সিজারের পর অনেকের কাটা জায়গায় ইনফেকশন হয়। অনেকে বুঝতে পারে না এই ইনফেকশন গুলো কিভাবে হয়। অনেকের কাটা জায়গা দিয়ে রক্ত পূজ আসতে শুরু করে তাহলে বুঝতে হবে কাটা জায়গায় ইনফেকশন হয়েছে। যাদের অতিরিক্ত চুলকায় ও সহজে ভালো হতে চায় না তাদের ভেতরে নিশ্চয় কোন ইনফেকশন হয়েছে। এরকম লক্ষণ গুলো দেখা দিলে খুব দ্রুত ডাক্তার কাছে যেতে হবে। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা নিতে হবে।

সিজারের পর ড্রেসিং

সিজার পর নিয়মিত ড্রেসিং করতে হবে। নিয়মিত ড্রেসিং করলে সিজারে কাটা জায়গা কোন দ্রুত সেরে যাবে। কোন প্রকার ইনফেকশন হবে না। ড্রেসিং অবশ্যই দক্ষ কোন চিকিৎসক বা নার্স দিয়ে করাতে হবে। ড্রেসিং এর সময় অবশ্যই লক্ষ্য রাখতে হবে কোন প্রকার ময়লা না থেকে যায়। ডাক্তারের পরামর্শ অনুসারে নিয়মিত ড্রেসিং করলে। খুব দ্রুত কাটা জায়গা শুকিয়ে যাবে।কোন ইনফেকশন হবে না। খুব দ্রুত সুস্থতা ড্রেসিং টা খুব প্রয়োজন।

সিজার সম্পর্কে সাধারণ জিজ্ঞাসা

প্রশ্নঃ সিজারের পর কি কি খাবার খেতে হবে?
উত্তরঃ সিজার করার পরে ডাল, মটরশুঁটি, সবুজ ছোলা, স্ট্রবেরি, মিষ্টি আলু এই সকল খাবার খাওয়ার উপর জোরদার হন।

প্রশ্নঃ সিজারের কত ঘন্টা পর বেল্ট ব্যবহার করা উচিত?
উত্তরঃ এটি সুপারিশ করা হয় যে আপনি এটি জন্মের পরপরই এবং প্রসবোত্তর প্রথম কয়েক সপ্তাহের জন্য দিনের বেলায় পরা শুরু করুন। অন্যথায় অবশ্যই আপনাকে ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।

প্রশ্নঃ প্রসবের পর পেট বাঁধলে কি পেট কমে?
উত্তরঃ প্রসবের পরে একটি পেটের বাইন্ডার বা বেলি ব্যান্ড আপনার পেট কমাতে সাহায্য করতে পারে এবং আপনার মূল পেশীগুলিকে সুস্থ করার সাথে সাথে সমর্থন করতে পারে।

প্রশ্নঃ বাচ্চা হওয়ার কত দিন পর মাসিক হয়?
উত্তরঃ সাধারণত প্রসবের ৬-৮ সপ্তাহের মধ্যে মেয়েদের নরমাল মাসিক শুরু হয়।

লেখকের সর্বশেষ বক্তব্য

আজকে আমাদের এই আর্টিকেলের প্রধান আলোচনার বিষয় ছিলো সিজারের পর বেল্ট পরার নিয়ম সম্পর্কে। আশা করছি আপনি সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ে উক্ত বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এবং বুঝতে পেরেছেন। এই রকম আরো তথ্যবহুল আর্টিকেল প্রতিদিন পড়ার জন্য আমাদের সাথেই থাকুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url