ভাবসম্প্রসারণ ৬টি | ভাবসম্প্রসারণ তালিকা ২০২৪ আপডেট

প্রিয় পাঠক অথবা প্রিয় শিক্ষার্থীরা আপনার নিশ্চয়ই ভাবসম্প্রসারণ এর তালিকা দেখতে আজকের পোস্টটিতে এসেছেন। আজকের পোস্টটিতে আমরা আপনাদের জন্য ভাবসম্প্রসারণ ৬টি ও ভাবসম্প্রসারণ তালিকা সম্পর্কে আলোচনা করব এবং তা তুলে ধরার চেষ্টা করব।
ভাবসম্প্রসারণ তালিকা
সূচিপত্রঃপ্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধু আপনি যদি ক্লাস নাইন অথবা ক্লাস টেনে পড়ে থাকেন তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্য হতে যাচ্ছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ভাবসম্প্রসারণ পড়তে পোস্টটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন।

ভাবসম্প্রসারণ ৬টি | ভাবসম্প্রসারণ তালিকা ২০২৪

নিম্নে পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ ভাবসম্প্রসারণের তালিকা উল্লেখ করা হলোঃ

গ্রন্থগত বিদ্যা আর পরহস্তে ধন
নহে বিদ্যা, নহে ধন হলে প্রয়োজন

ভাব-সম্প্রসারণঃ বইয়ের বিদ্যা যা আত্মস্থ হয়নি, এবং পরের অধীন সম্পদ যা নিজের আয়ত্তে আসেনি-এ দু'টিই সমান। কারণ, প্রয়োজনের সময় এ সম্পদ ও বিদ্যা কোন কাজে ব্যবহার করা যায় না।

বিদ্যা এবং ধনের সার্থকতা নির্ভর করে মানুষের প্রয়োজন মেটানোর ওপর। পার্থিব জীবনে ধন সম্পদ ও বিদ্যার গুরুত্ব অপরিসীম। গ্রন্থ বা পুস্তক পাঠের মাধ্যমে আমরা সাধারণত জ্ঞান লাভ করে থাকি। কেননা গ্রন্থ হচ্ছে জ্ঞানের ধারক ও বাহক। কিন্তু বই হৃদয়ঙ্গম না করে কেবল প্রচুর বই সংগ্রহে রাখলেই তাকে জ্ঞানী বলা যায় না। কারণ ব্যক্তিগত, সামাজিক ও জাতীয় জীবনের প্রয়োজন দেখা দিলে গ্রন্থগত সে বিদ্যা কোনো কাজেই আসেনা। 

কেবল মুখস্ত করে পরীক্ষা পাস করলেই প্রকৃত শিক্ষিত হওয়া যায় না। যদি গ্রন্থের আদর্শকে আত্মস্থ করা না যায়, তাহলে তা জীবনের কোনো উপকারেই আসেনা। বিদ্যার পোশাকীরূপে দেহশোভিত করলেই যথার্থ বিদ্বান হওয়া যায় না। অনুরূপভাবে ধনসম্পত্তি মানুষ কঠিন পরিশ্রম করে অর্জন করে এ জন্য যে, তা প্রয়োজনের সময় কাজে লাগিয়ে বিপদ থেকে উদ্ধার পাবে, নিজেকে বিপদমুক্ত করতে পারবে।

কিন্তু প্রয়োজনের সময় সেই ধন যদি অন্যের হাতে থাকে, নিজের কাজে লাগাতে না পারে, তখন সেই ধনের কোনো মূল্য থাকে না। মুখস্থ বা গ্রন্থগত বিদ্যাও ঠিক সেরকম, বাস্তব জীবনে মুখস্থ বা গ্রন্থগত বিদ্যাও কোনো কাজে আসে না। প্রকৃত পক্ষে, যে বিষয়টি আত্মস্থ করা যায় না, নিজের অধিকারে ও ব্যবহারে আনা যায় না তা যতই সমৃদ্ধ হোক তাতে মানুষের কোন উপকার হয় না।

শৈবাল দিঘিরে বলে উচ্চ করি শির
লিখে রেখো এক ফোঁটা দিলেম শিশির

ভাব-সম্প্রসারণঃ পৃথিবীতে এমন কিছু লোক আছে, যারা উপকারীর উপকার স্বীকার করে না। বরং তারা সামান্য উপকার করতে পারলেই দম্ভভরে তা প্রচার করে বেড়ায়।

শৈবাল এক প্রকারের সালোকসংশ্লেষণকারী জলজ উদ্ভিদ। দিঘির অথৈ জলে এর জন্ম ও পরিবৃদ্ধি হয়। দিঘি থেকেই এটি আহার্য সংগ্রহ করে।মোটকথা এর অস্তিত্ব দিঘির ওপর নির্ভরশীল। সুতরাং দিঘির প্রতি কৃতজ্ঞতাবোধ থাকা শৈবালের নৈতিক দায়িত্ব। পরনির্ভরশীল শৈবালের গায়ে কিছু শিশির বিন্দু জমা হয় এবং বায়ুতাড়িত হয়ে সেই শিশির বিন্দু গড়িয়ে পড়ে দিঘির জলে। সাথে সাথে নির্লজ্জের ন্যায় সদম্ভে সে দিঘির দৃষ্টি আকর্ষণপূর্বক ব্যাপারটি স্মরণ রাখার জন্য ইঙ্গিত দিল। আশ্চর্যই বটে। দিঘির পানিতে যার জন্ম, স্থিতি ও লয়। তারই নাকি এমন দম্ভ, এত ঔদ্ধত্য এক ফোঁটা পানি দান করেছে বলে। 

মানব সমাজে শৈবালের মত এক শ্রেণির মানুষ আছে, যারা কখনো যদি উপকারীর সামান্যতম উপকার করতে পারে, তবে তা অতিরঞ্জিত করে প্রচার করার প্রয়াসে তারা ব্যস্ত হয়ে ওঠে। অথচ তারা একথাটি বুঝতে চেষ্টা করে না যে, অজস্র উপকারের ঋণ স্বীকার না করে কিঞ্চিৎ উপকার করেই সগৌরবে প্রচারের যে চেষ্টা তা নিতান্তই হাস্যকর। প্রকৃতপক্ষে যিনি মহৎ এবং যথার্থ পরোপকারী, তিনি অপরের উপকার করে কখনো দম্ভ প্রকাশ করেন না। 

নিছক আত্মপ্রচারের জন্য নয়, বরং নিঃস্বার্থভাবেই তিনি পরের উপকার করেন। তাই প্রত্যেকেরই উচিত উপকারীর প্রতি কৃতজ্ঞতাবোধ প্রকাশ করা। কেননা অকৃতজ্ঞ লোকদের স্বয়ং আল্লাহও পছন্দ করেন না।প্রতিদানের প্রত্যাশা নয়, মানবকল্যাণের জন্য নিঃস্বার্থভাবে পরের উপকার করাই মহৎ প্রাণ ব্যক্তির কাজ।

সকলের তরে সকলে আমরা
প্রত্যেকে আমরা পরের তরে

ভাব-সম্প্রসারণঃ মানুষ পশুর মত আত্মকেন্দ্রিক জীবনযাপন করতে পৃথিবীতে আসেনি। বরং নিজেকে অন্যের স্বার্থে বিলিয়ে দেওয়াই মানব জীবনের সার্থকতা।

মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব। পৃথিবীতে মানুষের রয়েছে মহান দায়িত্ব আল্লাহ তা'আলা পৃথিবীতে মানুষকে পাঠিয়েছেন শুধু নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত থাকার জন্য নয়, বরং তাকে চারপাশের মানুষের কথা ভাবতে হবে। সমাজে বাস করতে হলে একে অপরের সুবিধা-অসুবিধার কথা চিন্তা করতে হবে। কারণ পারস্পরিক সহযোগিতাই মানবজীবনের উন্নতির মূল। এ সহযোগিতা ছাড়া সুস্থ, সুন্দরভাবে বাঁচা সম্ভব নয়। 

অন্যকে বঞ্চিত করে কেউ কখনো বেশি দূর অগ্রসর হতে পারে না। বরং জীবনকে যখন অপরের জন্য বিলিয়ে দেয়া হয়, জীবন তখনই সার্থক হয়। তাই সংকীর্ণ ব্যক্তিস্বার্থ পরিহার করে বৃহত্তর মানুষের কথা ভাবতে হবে। সেখানেই রয়েছে মানবজীবনের সার্থকতা। নিজের স্বার্থকে বিসর্জন দিয়ে অন্যের জন্য জীবন উৎসর্গ করার মহৎ মানসিকতাই দিতে পারে বৃহত্তর মুক্তি। কারণ যারা অন্যের জন্য জীবন উৎসর্গ করেন তাঁরা কখনো মরে না। 

বরং প্রতিটি মানুষের হৃদয়ে অমর হয়ে থাকেন যুগ যুগ ধরে। যেমন অমর হয়ে আছেন- আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (স.), যিনি আজীবন মানবজাতির স্বার্থে নিজের জীবনকে উৎসর্গ করে গেছেন। এমনি করে এ পৃথিবীতে মহৎ ও সজ্জন ব্যক্তিরা সদা পরহিতে আত্মদান করে গেছেন এবং এভাবেই তারা হয়েছেন স্মরণীয়। কেননা অপরের সুখ-দুঃখের কথা চিন্তা না করে মানুষ কেবল নিজের সুবিধার জন্য সর্বশক্তি প্রয়োগ করলে, কারও মঙ্গল সম্ভব নয়। 

ত্যাগই আজ পৃথিবীকে এমন সুন্দর ও সুখের করে গড়ে তুলেছে। পশুরাই শুধু নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত থাকে। মানুষ পশুর মতো স্বার্থপর নয়। নিজের স্বার্থের কথা না ভেবে পরের মঙ্গলের জন্য জীবন উৎসর্গ করাই প্রতিটি মানুষের কর্তব্য।স্বার্থপর হয়ে কেউ পৃথিবীতে বাঁচতে পারে না। তাই পরের কল্যাণে নিজেকে নিবেদিত করার মাধ্যমে জীবনকে সার্থক ও ধন্য করা সম্ভব।

এ জগতে হায়, সেই বেশি চায়, আছে যার ভুরি ভুরি
রাজার হস্ত করে সমস্ত কাঙালের ধন চুরি

ভাব-সম্প্রসারণঃ পৃথিবীতে মানুষ স্বভাতই যত পায়, তত চায়। তার চাওয়ার কখনও শেষ হয় না। যার লাখ টাকা আছে সে কোটিপতি হতে চায়। এই আরও পাওয়ার ইচ্ছা মানুষকে অমানুষ করে তোলে। ফলে তারা গরিবের সামান্য সম্পদটুকুও আত্মসাৎ করতে কুণ্ঠাবোধ করে না।

পৃথিবীতে সম্পদশালীদের সম্পদের প্রতি তৃষ্ণা দুর্নিবার ও অসীম। তাদের চিরঅতৃপ্ত' এ তৃষ্ণাকে চরিতার্থ করার প্রয়াসে তারা অনাহারী ও নিরন্ন মানুষের সম্পদকেও কেড়ে নিতে কুণ্ঠাবোধ করে না। আমাদের এ পৃথিবীতে বিচিত্র শ্রেণীর মানুষের বাস। কেউ ধনী, কেউ দরিদ্র, কেউ রাজা, আবার কেউবা কাঙাল। পৃথিবীতে যারা প্রচুর সম্পদের মালিক, যাদের প্রচুর ধন আছে, তাদের সম্পদতৃষ্ণা কোনো দিন পরিতৃপ্ত হয় না। তারা যত পায়, তত চায়। এভাবে তারা নিজেদের আরও বেশি সম্পদশালী করে তোলে। 

তাদের নির্বিচারে সম্পদ সংগ্রহের ফলে গরিবের সম্পদে হাত পড়ে। তারা চায় ছলে-বলে কৌশলে স্বীয় ঐশ্বর্যের ভাণ্ডার স্ফীত করতে। পক্ষান্তরে, যারা অভাবগ্রস্ত ও দীন-দরিদ্র, সম্পদ সম্পর্কে তাদের মোহ বিত্তবানদের মতো সর্বগ্রাসী নয়। তারা দুবেলা দুমুঠো খেতে পেরেই পরিতৃপ্ত। দুর্দমনীয় লোভ, আকাঙ্ক্ষা ও ঐশ্বর্যের মোহ মানুষকে কীভাবে পাপাচারে লিপ্ত করে তোলে তার প্রমাণ ইতিহাসে অজস্র।

ক্ষমতালিলু উদ্ধত সম্রাটগণ একের পর এক রাজ্য জয় করে দরিদ্রের শেষ সম্বলটুকুর দিকে দৃষ্টি দিতে কসুর করেন নি। একুশ শতকে এসেও আমরা দেখছি বিত্তবানদের আগ্রাসী মনোভাবের তেমন কোনো পরিবর্তন হয় নি। অর্থলিপ্সার ফলেই তারা সাধারণ মানুষকে শোষণ করছে, বঞ্চিত করছে দুবেলা দুমুঠো খাওয়ার অধিকার থেকে। পৃথিবীর একদিকে বুভুক্ষু মানুষের হাহাকার, অপরদিকে বিত্তবানদের বিত্তবাসনার প্রতিযোগিতা। 

একদিকে শোষণের স্টীমরোলার, অন্যদিকে শোষিত ও নিপীড়িতের বুকফাটা আর্তনাদ। এরকম অসম সমাজব্যবস্থা কারো কাম্য হতে পারে না। ধনীর ধন যতই বাড়ুক তার প্রত্যাশা থাকে আরও ধন আয়ের অথচ তারা যদি এটা না করে গরীব-দুঃখীদের মাঝে ধন বিতরণ করত তাহলে সমাজে কতই না শান্তি বিরাজ করত।

আলো বলে, অন্ধকার তুই বড় কালো
অন্ধকার বলে, ভাই তাই তুমি আলো

ভাব-সম্প্রসারণঃ বৈপরীত্য আছে বলেই আমরা বস্তুর স্বরূপ উপলব্ধি করতে পারি। পৃথিবীতে মন্দ আছে বলেই ভালোর এত কদর।

আলো ও আঁধার পৃথিবীর সৃষ্টি থেকেই বিদ্যমান। আলো ও আঁধার দুটিই বাস্তবতা। আঁধারের পটভূমিতেই উদ্ভাসিত হয় আলোর মহিমা। যদি পৃথিবীতে কখনো সূর্য অস্ত না যেত, অহোরাত্র সূর্যালোকে চারদিক প্লাবিত হত, তাহলে তার কি কোনো মূল্য থাকত? অন্ধকার এসে দিবালোককে গ্রাস করে বলেই দিনের আলো বৈচিত্র্যহীন ও বৈশিষ্ট্যহীন হয়ে পড়ে না। আলো-আঁধারের এই আগমন-নির্গমন আছে বলেই পৃথিবী বৈচিত্র্যময় ও সুন্দর হয়ে ওঠেছে। 

আমাদের এই সুন্দর পৃথিবীতে পরস্পর বিপরীতধর্মী উপাদানসমূহের দ্বান্দ্বিক প্রক্রিয়া সচল, অস্তিত্ববান। সৃষ্টি-ধ্বংস, জন্ম-মৃত্যু, আলো-আঁধার, সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা, তৃপ্তি-অতৃপ্তি, ভালো-মন্দ, ইতর-ভদ্র, সুজন-কুজন, পাহাড়-সমতল, মরুভূমি-সমুদ্র এসব প্রাকৃতিক বৈপরীত্যের সমন্বয়ে গড়ে উঠেছে এ জগৎ-সংসার। এরূপ বৈপরীত্যের মধ্যেই সৃষ্টির সৌন্দর্য নিহিত রয়েছে। নিরবচ্ছিন্ন সবকিছুর অস্তিত্বই মূল্যহীন। মৃত্যু অবধারিত্ব বলেই জীবন এত মূল্যবান। 

পৃথিবীতে মৃত্যুর উপস্থিতি না থাকলে জীবন হত মূল্যহীন। ধ্বংসের ভয় আছে বলেই মানুষ সৃষ্টিকে সংরক্ষিত করে, ভালোবাসে। পৃথিবীতে সুখের অস্তিত্ব আছে বলেই মানুষ দুঃখকে হাসিমুখে বরণ করে সুখের আশায়। আর দুঃখের অস্তিত্ব আছে বলেই সুখের বৃত্তে বসবাস করার জন্যে মানুষের প্রাণান্ত প্রচেষ্টা। পৃথিবীতে দুই বিপরীতধর্মী বৈশিষ্ট্যের একটাকে বাদ দিয়ে অন্যটার অস্তিত্ব কল্পনাতীত। পরস্পরবিরোধী বৈশিষ্ট্যের অস্তিত্বের কারণে প্রকৃতি হয়েছে সুষম ও শ্রীমণ্ডিত।

সংসার সাগরে দুঃখ তরঙ্গের খেলা
আশা তার একমাত্র ভেলা

ভাব-সম্প্রসারণঃ পার্থিব জগতের দুঃখ-সঙ্কুল জীবনে মানুষ প্রতিনিয়ত বিপর্যন্ত। তবুও এ পৃথিবীর মানুষ এতে শঙ্কাকুল নয়। আশায় বুক বেঁধে সে পাড়ি জমায় সংসার সমুদ্রে।

মানুষের জীবনের চলার পথ কুসুমিত নয়। সে পথ নানা বাধা-বিঘ্নে ভরা। সমস্যাসঙ্কুল সংসারের প্রতিকূল পরিবেশে আশার ওপর নির্ভর করেই মানবজীবনের দিনগুলো অতিবাহিত হয়। সাগরে যেমন অসংখ্য তরঙ্গ উঠে বিক্ষুব্ধ করে রাখে তার বুক, তখন জলযান পরিচালনা করা কঠিন হয়ে পড়ে তেমনি সংসাররূপ দুঃখ-সাগরে এ ধরনের অসংখ্য প্রতিবন্ধকতা মানুষকে গ্রাস করতে চায়। সেই উত্তাল দুঃখের সাগর মানুষ অতিক্রম করে আশার তরণী ভাসিয়ে। 

মানুষ যেমন ভেলা ভাসিয়ে উত্তাল তরঙ্গ পাড়ি দেয় তেমনি সংসার-সাগরেও সঙ্কট উত্তরণের জন্য কোন অবলম্বনকে আশ্রয় করতে হয়। আর এই অবলম্বন হলো মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা। আজকের দিনের সমস্যা ও দুঃখের দিনগুলো আগামী দিন থাকবে না, আগামী দিনগুলো ভালো হবে, বয়ে আনবে কল্যাণ, এই আশায়ই মানুষ স্বাভাবিকভাবে দুঃখ-কষ্টকে মেনে নেয়-সুখের আশায়। বস্তুত আশা না থাকলে মানুষ তলিয়ে যেত দুঃখের সমুদ্রে-'আশার দুয়ারে প্রতিটি মানুষই অতিথি'। তাই মানুষের বেঁচে থাকার অবলম্বন হলো আশা, আশাই মানুষকে সাফল্যের পথে এগিয়ে নিতে প্রেরণা যোগায়। 

বর্তমানের উপর দাঁড়িয়ে আছে যে জীবন তার মধ্যে প্রেরণা যোগায় ভবিষ্যতের আশা। যে আশা মানুষকে দেয় পথ চলার প্রেরণা, দেয় সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধির আশ্বাস। এই আশা এমনই যে তা পূরণ হবার পরেও লুপ্ত হয়ে যায় না, বরং অন্য কোনো ধরনের নতুন আশায় রূপান্তরিত হয়ে আবারও মানবমনকে অধিকার করে, এ হল এক অফুরান শক্তির উৎস। কবির ভাষায় 'আশাকে ত্যাগ করলেও সে... ফিরে ফিরে আসে।' আর আসে বলেই নিরুদ্বিগ্নভাবে চলছে পৃথিবী, গঠিত হচ্ছে নতুন নতুন সমাজ ব্যবস্থা, অট্টালিকা, সম্ভব হচ্ছে নতুন নতুন উদ্ভাবন। 

আশা আছে বলেই শত প্রতিকূলতার মধ্যেও মানুষ বিশ্বজগৎকে শতভাবে অক্লান্ত পরিশ্রমে ঢেলে সাজাচ্ছে, সাজাবেও। জীবনের সংক্ষিপ্ত পরিসরে মানুষ জানে না কখন তার জীবনের দুঃখ শেষ হবে। জানে না বলেই আশায়-আশায় তার জীবন কেটে যায়। সহস্র দুঃখ- বেদনা আর প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে মানুষ রুখে দাঁড়ায়, বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখে আশার ভেলায় ভর করে।

লেখক এর কথা

আশা করছে প্রিয় শিক্ষার্থীরা আপনারা ভাব সম্প্রসারণ গুলো সম্পর্কে জানতে পারলেন এবং সেগুলো পড়তে পারলেন। যদি এ ধরনের রচনা অথবা ভাব সম্প্রসারণ সম্পর্কে জানতে চান তাহলে আমাদের ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url