আমার জীবনের গল্প - জীবনের গল্প সম্পর্কে জেনে নিন

আমি আজকে আপনাদের মাঝে একটি সত্য ঘটনা তুলে ধরব। যেই ঘটনাটা মূলত আমার জীবনের গল্প এবং আমার জীবনে ঘটে যাওয়া ঘটনা।
আমার জীবনের গল্প
আশা করি পুরো গল্পটি পড়লে আপনার ভালো লাগবে এবং আপনি একজন ব্যর্থ ছেলের জন্ম থেকে শুরু করে স্কুল জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত সমস্ত ঘটনা জানতে পারবেন। তাই মনোযোগ দিয়ে গল্পটি সম্পন্ন পড়ার অনুরোধ রইলো।

জীবনের গল্প - আমার জীবনের গল্প

কিছু কিছু মানুষের গল্প থাকে যেই গল্পগুলো আর সব মানুষের মতো একি হয়ে থাকে না। মূলত তাদের জীবনের গল্পগুলো একটি অন্যরকম সুতাই বাঁধা থাকে। তারা জীবনে অনেক কিছু উপলব্ধি করতে পারে এবং জীবন অনেক কষ্টের মধ্যে দিয়ে পার করে। তাদের জীবন অন্যদের মতো সুখে শান্তিতে অথবা বাবার আদর ভালোবাসায় কাটে না। বরং তাদের জীবন কাটে কিছু আফসোসের মধ্যে দিয়ে। আমি আপনাদের মাঝে ঠিক সেইরকম একটি গল্প উপস্থাপন করব। আশা করি সম্পূর্ণ গল্পটি মনোযোগ দিয়ে পড়লে আপনি জীবনের সঠিক মানে খুঁজে পাবেন।

আমার জীবনের গল্প

একটি ছোট্ট গ্রামে একটি ছোট্ট সুখী পরিবার বসবাস করত। পরিবারে ছিল বাবা,মা এবং একটি মেয়ে সন্তান।বাবা ছোটখাটো ব্যবসা করত। এককথায় বলতে গেলে সুখী পরিবার ছিল। খুব আনন্দে দিন কাটছিল সেই ছোট্ট পরিবারের।কিন্তু হঠাৎ করে বাবার ব্যবসা খারাপ যেতে শুরু করল। বাবা অনেক টেনশনের মধ্যে পড়লেন। এইরকম ভাবে টেনশন করতে করতে বাবা একদিন বাড়ি ফিরলেন। বাড়ি ফিরে বাবা শুনেন যে, এনে দ্বিতীয়বারের মতো বাবা হতে চলেছেন।

এমনিতে বাবার মাথায় হাজারো চিন্তা। তার ওপরে আর একটা সন্তান। বাবা চিন্তায় পড়ে গেলেন কি করবেন বুঝতে পারছিলেন না। তখন আস্তে আস্তে বাবা তার সমস্ত চিন্তাগুলোকে ভোলাতে একটু একটু করে নেশা শুরু করলে।বাবা নেশা করে রোজ মায়ের সাথে ঝামেলা করতো। একদিন অনেক বড় ঝামেলা হল।বাবা কি করলো ওই সন্তান তার মাকে বাড়ি থেকে তার বাবার বাড়িতে তাড়িয়ে দিল। মা আর কি করবে, পেটে সন্তান নিয়ে বাবার বাড়িতে চলে গেলেন।

এইরকম দেখতে দেখতে নয় মাস কেটে গেল। নয় মাস পর হঠাৎ করে বাবার কানে খবর আসলো। যে তার ফুটফুটে একটি ছেলে সন্তান হয়েছে। কিন্তু বাবা নাছোড়বান্দা ছেলে হওয়ার কথা শুনেও আনতে যাবে না ছেলে এবং ছেলের মাকে।এখন সেই সন্তানের দাদু কি করলেন, সেই সন্তান অর্থাৎ তার নাতিকে আনতে গেলেন। তারপর খুবই আনন্দের সাথে নাতি এবং ছেলের বউকে নিয়ে আসলেন। তারপরে ছেলের বাবাটা নেশা করে বাড়িতে প্রচুর ঝামেলা করতো।

আস্তে আস্তে মায়ের ভালোবাসায় এবং তার বড় বোনের ভালোবাসায় ছেলেটা বড় হতে শুরু করলো।ছেলেটা ধীরে ধীরে বড় হচ্ছে তবে, ছেলেটা ধারের কাছেও তার বাবা আসছে না।এক কথায় বলতে পারেন বাবার আদর ছাড়াই ছেলে বড় হতে শুরু করলো। ফেলে আস্তে আস্তে বড় হতে শুরু করলো, সর্বপ্রথম স্কুলে গেল। তবে ছেলেটা তার বাবার কাছে যেতে অনেক চেষ্টা করতো, কিন্তু তার বাবা তাকে দূরে ঠেলে দিত।

যখন ছেলেটা দেখতো যে, অন্য সবার বাবারা তাদের সন্তানকে আদর করছে স্নেহ করছে তখন ছেলেটার অনেক খারাপ লাগতো। একেবারে বেশি খারাপ লাগতো এমন কিছু না। অবশিষ্ট গল্প নিচ থেকে শুরু করা হয়েছে.........

স্কুল জীবনের গল্প

তার কারণ, ছেলেটা সবেমাত্র স্কুলে ভর্তি হয়েছে। তার তখন অতোটা বোঝার ক্ষমতা হয়নি। তারপরে আস্তে আস্তে বাবার ভালোবাসা ছাড়া ছেলে তার স্কুল লাইফ শেষ করল। স্কুল থেকে এখন হাইস্কুলে যেতে হবে। হাই স্কুলে ভর্তি হলো, আর ইস্কুলে যত ধরনের সমস্যা হতো। সব ছাত্রের ফ্যামিলি থেকে তাদের বাবা যাইত। কিন্তু শুধুমাত্র সেই ছেলেটির ফ্যামিলি থেকে তার মা যেতেন। নতুন হাইস্কুলে ভর্তি হয়েছে, এখন তো নতুন স্কুল ড্রেস দরকার।

ছেলেটা ইস্কুল শেষ করে বাড়িতে গিয়ে ধীরে ধীরে তার বাবার কাছে গিয়ে বলল, যে আমার স্কুল ড্রেস লাগবে। বাবা তো মুখের উপর বলে দিলেন যে দিতে পারব না। বাধ্য হয়ে মার কাছে গিয়ে বলল। আম্মু বললেন দাঁড়া দেখছি। এই কথা বলে, আম্মু অনেক চেষ্টা করল কিন্তু পারলো না। শেষ পর্যন্ত আম্মু কি করলেন, ছেলেটার সম্পর্কে বড় ভাই হন তার থেকে পুরাতন স্কুল ড্রেস এ আনলেন। ছেলেটা ইস্কুল ড্রেস দেখে অনেক খুশি। যদিও স্কুল ড্রেসের প্যান্ট টা অনেক বড় হয়ে গেছিল।

তাও কি আর করার পড়তে তো হবেই। ছেলেটি পুরাতন এবং লম্বা স্কুল ড্রেস পরতে বলে সবাই তাকে নিয়ে হাসাহাসি করত । আর যার কারণে ছেলেটির কোন বন্ধু ছিলই না বললে চলে।ছেলেটি একা একা ক্লাস রুমের মধ্যে বসে থাকতো মনমরা হয়ে। সবাই ক্লাস শেষে খেলাধুলা করত কিন্তু ছেলেটি বসে থাকতো ক্লাস রুমে একা একা। এইরকম করতে করতে ছেলেটির জীবন কেটে যেতে থাকলো।দেখতে দেখতে অনেক বছর কেটে গেল ছেলেটি সবেমাত্র দশম শ্রেণীতে উঠেছে।

হঠাৎ একদিন কি হলো, ছেলেটি স্কুল গেল স্কুলে গিয়ে ক্লাস শেষ করে বাহিরে এসে সবে মাত্র দাঁড়িয়েছে। হঠাৎ করে মৃদুস্বরে খুব সুন্দর একটি আওয়াজ তার কানে ভেসে আসলো। ছেলেটি পিছনে ঘুরে দেখল প্রথমবার সেই মেয়েটিকে। মেয়েটির চোখে যেন গভীর মায়ায় আচ্ছন্ন। কেন জানি সেই ব্যর্থ ছেলেটা হঠাৎ করে প্রথম দেখাতেই তার প্রেমে পড়ে গেল। তারপর ক্লাস শেষে সারাক্ষণ মেয়েটার দিকে তাকিয়ে থাকতো। এরকম ভাবে মেয়েকে দেখতে দেখতে বেশ কয়েকটি দিন কেটে গেল।

সাধারণত প্রত্যেকটি হাইস্কুলে প্রতিদিন সকালে ক্লাসের আগে একটি সমাবেশ হত। সমাবেশের সকল শিক্ষার্থীরা উপস্থিত থাকতো। সেই সমাবেশে জাতীয় সংগীত হতো, সুরা ফাতেহা পাঠ হতো এবং দেশের প্রতি শপথ পাঠ হতো। ছেলেটা মেয়েটাকে দেখার আগে কি করতো, দশম শ্রেণীর লাইনের সবার শেষে দাঁড়াতো যাতে করে কোন শিক্ষক তাকে সমাবেশের প্রধান কমান্ডার হিসেবে নিয়োজিত না করে। কিন্তু মেয়েটার প্রেমে পড়ার পর ছেলেটি প্রায় খেয়াল করতো মেয়েটি একটু ছোট হয় সমাবেশের লাইনের সবার সামনে দাঁড়াতো।

এখন পিছন থেকে তো আর মেয়েটিকে দেখতে পাবে না। তাই পরের দিন থেকে ছেলে কি করলাম প্রতিদিন সামনে গিয়ে প্রধান কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করত। আর মেয়েদের দিকে অপলব দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকত। তবে আপনাদের বলে রাখি, ছেলেটা কিন্তু একদম ভীতু টাইপের। আর ছেলেটা পড়তো দশম শ্রেণীতে আর সেই ছোট্ট মেয়েটি পড়তো অষ্টম শ্রেণীতে। তবে বলে রাখা ভালো ছেলেটির ক্লাসে সর্বমোট দুইটি বন্ধু ছিল।

তার বন্ধুরা তাকে প্রায় বলতো যে, যা আর মেয়েটাকে তোর ভালোবাসার কথা বল। মেয়েটা প্রচন্ড রাগী স্বভাবের ছিল যার কারণে ছেলেটা তাকে ভালোবাসার কথা বলার সাহস করত না। কারণ যদি মেয়েটা তার ওপর প্রচণ্ড রাগ দেখায় তখন কি করবে। যখন ছেলেটি মেয়েটিকে ভালোবাসার কথা বলতেই পারলো না তখন ছেলেটির একটি বন্ধু কি করলো, বলল যে, সপ্তম শ্রেণীতে তার বোনের মেয়ে পড়ে। যদি তাকে বলা হয় সে তোর হয়ে তোর ভালোবাসার কথা তার কাছে গিয়ে বলে দিবে।

যেই কথা সেই কাজ পরের দিন ছেলেটির বন্ধুর বোনের মেয়ে মেয়েটিকে গিয়ে ছেলেটির পছন্দের কথা বলল। তবে বলে রাখা ভালো মেয়েটি অনেক অহংকারী ছিল যার কারণে সহজ সরল ছেলেটির পছন্দ করার কথা শুনে হেসে উঠলো এবং মেয়েটি বলল আমি এখন কোনো ভালোবাসার মধ্যে জড়াইতে চাই না। তারপরে ছেলেটির মন অনেক খারাপ হয়ে গেল যে, জীবনে প্রথম কাউকে ভালো লাগলো কিন্তু মেয়েটি তার ভালোবাসা বুঝলোই না।

ছেলেটির বেশ কয়েক দিন মন অনেক খারাপ থাকল। তখন তার একটা বন্ধু থাকে সে বলল শোন তুই সরাসরি গিয়ে মেয়েকে তোর ভালোবাসার কথা বল। আর যদি ভালোবাসার কথা না বলতেই পারিস তাহলে একটি প্রেম পত্রের মধ্যে তোর মনের সমস্ত কথা লিখে তাকে দে। তাহলে যদি সে তোর ভাগ্যে থাকে তাহলে তোরে এমনিতেই ভালবাসবে। ছেলেটি কেমনে প্রেমপত্র লিখবে বুঝতে পারছিল না, তারপরে অনেক কষ্টে তার কাছের একজন আত্মীয়র থেকে তার মনের কথা গুলো একটি চিঠিতে সুন্দর করে লিখে নিল।

চিঠির কথা শুনে আপনারা এখন হয়তো হাসতে শুরু করেছেন তার কারণ ২০১৯ সালে এসেও চিঠি আদান-প্রদান ব্যাপারটা সত্যিই অদ্ভুত। কিন্তু কি করবেন বলেন ছেলেটার মেয়েটার সামনে দাঁড়িয়ে তার মনের কথাগুলো বলা একদমই সম্ভব নয়। কারণ আপনাদের আগেই বলেছি ছেলেটি ঠিক কত পরিমানে ভীতু।হঠাৎ একদিন ছেলেটা সিদ্ধান্ত নিল যে, রবিবারের দিন মেয়েটির প্রাইভেট শেষে মেয়েটিকে তার মনের কথা বলার জন্য চিঠি দিবে।

যেমন কথা তেমন কাজ, ছেলেটি মেয়েটির প্রাইভেট সেন্টারের সামনে বসে আছে তার একটি বন্ধুকে নিয়ে। অপেক্ষা করতে থাকে সময় তিরিশ মিনিট থেকে শুরু করে দুই ঘন্টা হয়ে যায় তবুও মেয়েটি প্রাইভেট থেকে বের হয় না। বিরক্ত হয়ে ছেলেটির বন্ধু রাগ করে ছেলেটিকে রেখে চলে গেল। আর যাবার সময় বলল, তুই এখানে বসে থাক আমি গেলাম। ছেলেটি একা একা বসে রইলো, ঠিক তিরিশ মিনিট পর মেয়েটি প্রাইভেট শেষ করে রুম থেকে বের হয়ে আসছে।

ছেলেটি স্কুলের প্রধান গেটে দাঁড়িয়ে বলল আর মনে মনে ভাবতে শুরু করল যে, এই স্কুল গেটের সামনে মেয়েটিকে তার ভালোবাসার কথা বলবে। এরপরে মেয়েটি আসতে শুরু করল কিন্তু মেয়েটি তার সামনে দিয়ে চলে যাওয়ার পরেও ছেলেটি মেয়েটিকে ডাকতে সাহস পেল না। ছেলেটি কি করলো লুকিয়ে লুকিয়ে মেয়েটির পিছন পিছন যেতে শুরু করলো। তবে বলে রাখা ভালো মেয়েটি শুধুমাত্র একা ছিল না মেয়েটির সাথে তার একজন বান্ধবী ছিল।

ছেলেটি অনেক কষ্টের মেয়ের কাছে পৌঁছালো একদম কাছাকাছি মনে মনে ভাবল যাই হোক এবার চিঠিটা দিতেই হবে। হঠাৎ করে পেছন থেকে কার জানি ডাক ভেসে আসলো ছেলেটি পিছন ঘুরে দেখলো তার ইস্কুলের প্রধান শিক্ষক তাকে ডাকছেন। ছেলেটি দ্বিতীয়বারের মতো চিঠি মেয়েটিকে দিতে ব্যর্থ হল। এর পরবর্তীতে, প্রধান শিক্ষককে কোন মতে অজুহাত দেখিয়ে ওইখান থেকে বের হয়ে আবার মেয়েটির পেছনে পেছন যেতে শুরু করলো।

স্যারের সাথে কথা বলতে বলতে মেয়েটি তার থেকে বেশ দূরে চলে গেছে। ছেলেটি ভাবলো মনে হয় মেয়েটি এখন অটোতে করে বাড়িতে চলে যাবে। ছেলেটির মন তো অনেক খারাপ হয়ে গেল। কিন্তু তারপরেও দৌড়াদৌড়ি করে যেতে থাকলো আর মনে মনে ভাবতে শুরু করলো যাইহোক মেয়েটি অটোতে ওঠার আগেই তাকে চিঠি দিয়ে দিবে। এতে করে তার মার যদি খেতে হয় তাহলে লোকের মার খাবে।

তবে ছেলেটি ভাবতে পারে নাই যে, ছেলেটি মেয়েটাকে কিছু বলবে এই বিষয়টা মেয়েটা বুঝতে পেরেছে। যার কারণে মেয়ে অটোতে করে বাড়িতে না গিয়ে কি করল, মেয়েটির বান্ধবীকে নিয়ে হাঁটতে শুরু করলো। ছেলে তো অনেক খুশি মনে মনে ভাবতে শুরু করলো এবার তো আমি চিঠি দিয়েই দিব। মেয়েটির পিছন পিছন হাঁটতে শুরু করল, অনেক ভয়ে ভয়ে মেয়েটির পিছন পিছন হাটছিল মনে মনে সন্দেহ জাগছিল যে, রাস্তার আশেপাশে অনেক মানুষ রয়েছে তারা যদি মেয়ের পিছন পিছন হাঁটতে দেখে কিছু বলেন।

তার কারণ আপনাদের আগেই বলেছি ছেলেটি অনেক ভীতু। ছেলেটি মেয়ের পিছনে পিছনে হাঁটতে থাকে মেয়েরা বুঝতে পেরে একটু পর পর হাসতে থাকে আর পিছনে ফিরে ফিরে তাকায়। ছেলেটি যখন মেয়ের কাছে চলে যাচ্ছে তখন ভাবছে যে মেয়েটিকে ডাক দিবে কিন্তু তখন কেন জানি তার গলা থেকে কোন আওয়াজ বের হচ্ছিল না। যখন মেয়েটির একদম কাছে চলে যায় তখন মেয়েটি আবার দৌড়ে সামনে চলে যায়।

ঠিক এইরকম করতে করতে একসময় মেয়ের বাড়ির কাছাকাছি চলে আসে। তখন ছেলেটি ভাবে এবার আমাকে চিঠি দিতেই হবে তাতে যা হয় হবে। এবার ছেলেটি মেয়েটিকে পিছন থেকে ডাকলো, এই যে শুনছেন.... মেয়েটি অনেক তার আগের দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল আমাকে বলছেন। ছেলেটি উত্তরে বলল হ্যাঁ আপনাকেই বলছি। মেয়েটি ছেলেটাকে জিজ্ঞেস করল যে আপনার কোন সমস্যা কিছু বলতে চান। ছেলেটি কোন কথা ছাড়াই পকেট থেকে চিঠি বের করে মেয়েটির হাতে দিল। মেয়েটি তখন খুব একটা ভালোবাসা সম্পর্কে বুঝতো না।

মেয়েটি চিঠি পাওয়ার সাথে সাথেই সেটা বের করে অনেক জোরে জোরে পড়তে শুরু করলো। চিঠি পড়া শেষে মেয়েটি উত্তর দিল এটাই যে, আপনার সাহস তো কম নয় আপনি আমাকে প্রেমপত্র দিয়েছেন আমি আমার আব্বুকে বলে দিব তারপর দেখেন আপনার কি অবস্থা হয়। ছেলেটি অনেক ভয় পেয়ে গেল তারপর কোন কথা না ভেবেই পিছন দিকে ঘুরে দিল দৌড়। ছেলেটি কি করছিল, চিঠির শেষে তার নাম এবং নাম্বার লিখে দিয়েছিল।

তবে বলে রাখা ভালো ছেলেটি যে স্কুলে পড়তো সেই স্কুলের সাথে যে বাজারটি রয়েছে সেই বাজারে মেয়েটির বাবার অনেক বড় দোকান ছিল। ছেলেটি তারপর থেকে খুবই ভয় পেতে শুরু করলো যদি মেয়েটি তার বাবাকে বলে দেয় তাহলে ছেলেটির অবস্থা খারাপ হয়ে যাবে। আর কোনভাবে যদি মেয়ের বাবা ছেলের বাবা কে এই চিঠির সম্পর্কে বলেন তাহলে তো ছেলেটির অবস্থা খারাপ। এমনিতেই তার বাবা তাকে সহ্য করতে পারেনা তার ওপরে এমন একটি খারাপ কথা যদি শোনে তাহলে মনে হয় তাকে বাড়ি থেকে বের করে দিবে।

ছেলেটি এই কথাগুলো চিন্তা ভাবনা করতে করতে বাড়িতে গিয়ে কি করলো শুরুতে গিয়ে তার বাটন ফোন বন্ধ করে রাখল। যাতে করে মেয়েটির বাবা তার নাম্বারে কল না দিতে পারে। তারপরে ছেলেটি আরো ভাবল যে, মেয়েটি তো আমাকে ভালো করে চিনে যে আমি তার স্কুলে পড়াশোনা করি। যদি মেয়েটা তার বাবা কি স্কুলে নিয়ে আসে তাহলে তো ছেলেদের অবস্থা শেষ। এই ভয়ে ছেলেটি প্রায় ৭ দিন পর্যন্ত স্কুলে যায় নাই।

সাত দিন পর স্কুলে গেল, যাওয়ার পর মেয়েটাকে দূর থেকে দেখলো। আর মেয়েটি তার তার কাছে আসলো না বরং, মেয়েটির বান্ধবীকে পাঠালো ছেলের কাছে। ছেলেটি তো মহা খুশি যে ছেলের মত মেয়েটির হয়তো ছেলেটিকে ভালো লেগে গেছে। মেয়েটির বান্ধবী এসে ছেলেটিকে বলল, ভাইয়া... ওই আপনারে পছন্দ করে না, আপনি ওর যোগ্য না, দয়া করে আপনি ওকে আর বিরক্ত করবেন না। যদি বিরক্ত করেন তাহলে মেয়েটি ওর বাবাকে বলে দিবে।

আর বলল যে, মেয়েটি এখন কোন ধরনের ভালোবাসার সম্পর্কে জড়াইতে চায় না। কি আর বলবো, জীবনের প্রথম ছেলেটি একজনকে ভালোবাসলো জীবনের প্রথম এই কষ্ট পেল। কয়েকদিন মেয়েরা আশেপাশে গেল না সব সময় ক্লাসে একা একা মনমরা হয়ে বসে থাকতো। পরে একদিন ওর বন্ধু বলল যে, দেখ বন্ধু মেয়েকে একবার ভালোবাসার কথা বলছিস একবারে তো ভালো মেয়ে তোর ভালোবাসাই রাজি হবে না। আরো কয়েকবার বল দেখ ঠিকই রাজি হয়ে যাবে।

ছেলেটি তারপর প্রতিনিয়ত মেয়েটির পিছন পিছন ঘোরা শুরু করলো। বলতে পারেন সব বাজে ছেলের মত মেয়ের পিছন পিছন করতে শুরু করলো। মাঝেমধ্যে মেয়েটিকে চকলেট দেওয়ার চেষ্টা করল কিন্তু মেয়েটা নিত না। মেয়েটা শুধু একটা কথাই বলতো যে, যদি আমাকে এভাবে বিরক্ত করেন তাহলে আমি কিন্তু আব্বুকে বলে দিব। আর আব্বুকে বলে দিলে আপনার খবর আছে। তারপরে প্রায় এক বছর মেয়েটির পিছনে সময় নষ্ট করলো তবুও মেয়েটা রাজি হলো না।

দেখতে দেখতে ছেলেটির হাই স্কুল জীবন শেষের প্রান্তে চলে আসলো, একটি নির্দিষ্ট তারিখে ছেলেকে স্কুল থেকে বিদায়ের অনুষ্ঠান হল। ছেলেটি ভাবল আজকে তো আমার স্কুল জীবনের শেষ দিন আজকে তাকে আবার ভালোবাসার কথা বলব। যে রকম কথা সেরকম কাজ মেয়েটিকে গিয়ে ভালোবাসার কথা বলল। মেয়েটি তার ওপর প্রচন্ড পরিমাণে ক্ষেপে গেল আর বলল যে, আমি এখনই আমার বাবাকে বলে দিচ্ছি আপনার নামে আমি পুলিশের কেস করব।

ছেলেটি অনেক ভয় পেয়ে গেল তারপর ছেলেটির বন্ধু বললো যে এইগুলা করো না আপু এগুলা করার দরকার নেই। এগুলা করলে ছেলের জীবনটা নষ্ট হয়ে যাবে। তারপরে মেয়েটি অবশেষে বলল, আচ্ছা আমি কিছু করবো না কিন্তু ওনাকে বলে দেন উনি যেন আমায় আর বিরক্ত না করে। ছেলেটি মনের দিক থেকে অনেক ভেঙ্গে পড়ল আর মনে মনে বলতে থাকলো যে, জীবনে তো আমি বাবার আদর পেলাম না, বাবার আদর কেমন হয় এইটা জানলাম না, শুধু দেখতাম অন্য সবার বাবারা তাদের সন্তানকে আদর করত।

আমি চেয়েছিলাম মেয়েটিকে ভালোবেসে আমার জীবনের সকল আফসোস, সকল দুঃখ কষ্ট ভুলে থাকতে কিন্তু সেটি আমার ভাগ্যে জুটলো না। এরপরে ছেলেটি কান্না শুরু করলো। তার বন্ধুরা তাকে সান্ত্বনা দিল। এরকম করতে করতে স্কুল জীবন শেষ হয়ে গেল কিন্তু ছেলেটার ভালোবাসা অপূর্ণ থেকে গেল। আশা করি এই সম্পন্ন গল্পটা আপনার ভালো লেগেছে। তবে আপনারা মনে রাখবেন এটি কোন বানানো গল্প নয় এই গল্পটি একটি ব্যর্থ ছেলের।

যেই ছেলেটি জন্মের পর থেকে বাবার ভালোবাসা তো পেলই না এবং চাইলেও একজনকে ভালোবেসে তার দুঃখ কষ্ট বলে থাকতে এবং তাকে আঁকড়ে ধরতে তাও পেল না। যদি আপনাদের গল্পটি ভালো লেগে থাকে তাহলে আমি এই গল্পের দ্বিতীয় ঘটনা আপনাদের মাঝে শেয়ার করব। তাই অবশ্যই আপনাদের মতামত জানাবেন।

কিছু কথা

হয়তোই সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার পর আপনি মনে করছেন যে, ছেলেটার হয়তো তার বাবার ওপর অনেক রাগ রয়েছে। কিন্তু একদম সেটা না, ছেলেটার তার বাবার ওপর কোন রাগ নেই।শুধু রয়েছে এক পৃথিবী সমান অভিমান। আর এই অভিমান তখনই কাটবে যখন ছেলেটির বাবা তাকে বুকে জড়িয়ে ধরবে। আর আপনারা অনেকে চিন্তা ভাবনা করবেন যে, গল্পের মেয়েটির নাম আসলে কি। তবে, ছেলেটি তার জীবনের প্রথম ভালোবাসার নাম প্রকাশ করতে চায়না।

আর কি করবেন বলেন এখন চাইলেও তো আর ছোটবেলা ফিরে পাওয়া যাবে না।ছেলেটা হাজারো চাইলে তার ছোটবেলা ফিরে পাবে না এবং তার ছোটবেলায় বাবার আদর ভালোবাসা ও স্নেহ ফিরে পাবে না। কিন্তু ছেলেটা ভাবে যদি তার জীবন অন্য সবার মত হতো। অন্য সবার মত তার বাবা তাকে ভালোবাসতো এবং তার ভালোবাসার মানুষ তার ভালোবাসা বুঝতো তুই না ভালো হতো। ছেলেটা কি বার করবে কিছুই করার নেই।

আর ছেলেটির জীবন সম্পর্কে পরের গল্প শুনতে অপেক্ষায় থাকুন। পরের গল্পতে আশা করি আপনি আরো অনেক কিছু জানতে পারবেন। যেমন, ছেলেটি আদেও পরে মেয়েকে বিরক্ত করল, আদেও কি তাদের ভালোবাসা পূর্ণ পেল অথবা ছেলেটা কি হাল ছেড়ে দিল ইত্যাদি সহ সবকিছু জানতে পারবেন।

লেখকের মন্তব্য।আমার জীবনের গল্প

এই সম্পূর্ণ পোস্টটি জুড়ে আমি আমার জীবনের গল্প এবং আমার জীবনের কষ্ট গুলো আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছি। আমি আশা করি আপনি সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়েছেন। সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার পর যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করুন এবং বিভিন্ন মজার মজার তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন।

আর সর্বশেষে সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার পর আপনার মতামত কমেন্টে জানান। তার কারণ, আপনাদের মতামতের উপর নির্ভর করেই গল্পটার দ্বিতীয় অংশ আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করব। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url